ইতালিকে গোল পাওয়ার কৌশল শেখাচ্ছেন এক ব্যাংককর্মী!

ইতালিকে গোল পাওয়ার কৌশল শেখাচ্ছেন এক ব্যাংককর্মী!

ইউরোতে দুর্দান্ত ফর্মে আছে চারবারের বিশ্বকাপজয়ী দল ইতালি। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে সেমিফাইনালে উঠেছে তারা।

প্রতিপক্ষের জালে ১১ বার বল জড়িয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে আজ্জুরিরা।

গোলের সংখ্যায় শীর্ষে না উঠলে প্রতিপক্ষের পোস্ট বরাবর সবচেয়ে বেশি শট নিয়েছে ইতালি। আজ্জুরিরা সব থেকে বেশি ১০১ বার গোলের চেষ্টা করেছে।

সবমিলিয়ে রবার্তো মানচিনির ইতালি এবার চমকে দিচ্ছে সবাইকে।

জানা গেছে, দলটির এমন সাফল্য আর মাঠে সব আক্রমণের বুদ্ধি দিচ্ছেন দেশটির এক সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা।

ওই সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকেই খেলোয়াড়রা শিখছেন টুর্নামেন্ট জেতার নানা কৌশল। গত সেপ্টেম্বর থেকেই ইতালির জাতীয় দলকে নিয়ে কাজ করছেন তিনি।

কীভাবে কর্নার, ফ্রি-কিক থেকে গোল বের করে আনা যায় তার উপায় জানাচ্ছেন সেই ব্যাংকার।

ওয়েলসের বিপক্ষে কর্নারে চতুরতার আশ্রয় নিয়েছিল ইতালি। মাত্তেও পেসিনার গোলের ওই ফ্রি-কিকের সময় দুজন খেলোয়াড় অফ সাইডে দাঁড়িয়ে থেকে বিভ্রান্ত করে দিয়েছিলেন ওয়েলসের ডিফেন্ডারদের।

এই কৌশল কি ওই ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকেই শেখা? কে তিনি?

তার নাম – জিয়ান্নি ভিও।  ভেনিসের ইউনিক্রেডিট ব্যাংকের একজন সাবেক কর্মী তিনি। ফ্রি কিক মারার ৪৮৩০টি কৌশল জানিয়েছেন এই জিয়ান্নি ভিও!

এ নিয়ে ‘দ্যাট এক্সট্রা থার্টি পারসেন্ট’ নামে একটি বইও লিখেছেন।

বইতে গোল পেতে ভিও লিখেছিলেন, শুধু দক্ষতা থাকলেই হবে না, খেলোয়াড়রা মাঠে মনস্তত্ত্ব ব্যবহার করে গোল অজর্ন করতে পারে। এমন কিছু পথ ও কৌশল বাতলে দিয়েছেন তিনি তার ওই বইতে। সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে পৌঁছে যাওয়ার কৌশলও জানিয়েছেন তিনি।

ভেনিসের এক পত্রিকায় একবার জিয়ান্নি ভিও বলেছিলেন, ‘কিছু কিছু খেলোয়াড় আছে যাদের ম্যাচ পড়ার ক্ষমতা অন্য রকম। সের্হিও রামোসের কথাই বলা যাক। আপনি যেখানেই বল পাঠান না কেন, বাজি ধরতে পারব, রামোস ওখানে যাওয়ার উপায় বের করে নেবেই। আসলে সেট পিসে থেকে ফল বের করার জন্য টাইমিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

ইতালির যে কৌশল বিভ্রান্ত করছে প্রতিপক্ষক
ইতালির যে কৌশল বিভ্রান্ত করছে প্রতিপক্ষক

ফুটবল বিষয়ে এই ব্যাংক কর্মকর্তার জ্ঞান প্রথমে নজরে পড়েছিল ১৯৯০ বিশ্বকাপে ইতালির গোলরক্ষক ওয়েল্টার জেঙ্গার। ২০০৫ সালে ভিও লেখা বইটি হাতে পড়ে জেঙ্গার। জেঙ্গা তখন রেড স্টার বেলগ্রেডের কোচ। বইটি পড়ে অভিভূত হন জেঙ্গা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আল-আইন ক্লাবের কোচ হওয়ার পর ভিওকে সঙ্গে করে নিয়ে যান জেঙ্গা। তাকে দিয়ে  সেট পিস অনুশীলন করান। এরপর সিরিআ-র কাতানিয়ার দায়িত্ব নিল সেখানেও ভিওকে সেটপিস স্পেশালিস্ট হিসেবে নিয়ে যান জেঙ্গা।

সব দায়িত্বই দুর্দান্তভাবে পালন করেন ভিও। তার শেখানো কৌশলে সেবার ৪৪ গোল করে কাতানিয়া। যার ১৭টি এসেছিল সেট পিস থেকে।

এবার ইউরোতে জায়গা নিশ্চিত করেই সেই ভিওর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ইতালির কোচ মানচিনি। শিষ্যদের দায়িত্ব দিয়েছেন  ভিওর কাঁধে। আজ্জুরিদের যেন সেট পিস থেকে গোল পাওয়া কৌশলগুলো শেখান তিনি।

এ বিষয়ে ভিও বলেঝেন, ‘আমাকে মানচিনি সরাসরি ডেকেছেন। আমরা বোলোনিয়াতে দেখা করি, একটু আলাপ হলো এবং রাজি হই। গত সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করছি।’

তথ্যসূত্র: দ্য সান ইউকে

আপনি আরও পড়তে পারেন